সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

মানবজাতির ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে

মানবজাতির ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে

যিশুর কাছ থেকে আমরা যা শিখি

মানবজাতির ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে

যিশু কি স্বর্গে জীবনের প্রতিজ্ঞা করেছিলেন?

হ্যাঁ, তিনি করেছিলেন! যিশু নিজে পুনরুত্থিত হয়েছিলেন এবং তাঁর পিতার সঙ্গে থাকার জন্য তিনি স্বর্গারোহণ করেছিলেন। কিন্তু, তাঁর মৃত্যু এবং পুনরুত্থানের আগে, তিনি তাঁর ১১ জন বিশ্বস্ত প্রেরিতকে বলেছিলেন: “আমার পিতার বাটীতে অনেক বাসস্থান আছে, . . . আমি তোমাদের জন্য স্থান প্রস্তুত করিতে যাইতেছি।” (যোহন ১৪:২) তবে, যারা এই বিশেষ সুযোগ লাভ করবে, তাদের সংখ্যা খুবই অল্প। যিশু এই বিষয়টা স্পষ্ট করেছিলেন, যখন তিনি তাঁর শিষ্যদের বলেছিলেন: “হে ক্ষুদ্র মেষপাল, ভয় করিও না, কেননা তোমাদিগকে সেই রাজ্য দিতে তোমাদের পিতার হিতসঙ্কল্প হইয়াছে।”—লূক ১২:৩২.

“ক্ষুদ্র মেষপাল” স্বর্গে কী করবে?

পিতা চান যেন এই ছোটো দলটা স্বর্গে যিশুর সঙ্গে এক সরকারের অংশী হয়। কীভাবে আমরা তা জানি? পুনরুত্থিত হওয়ার পর, যিশু প্রেরিত যোহনের কাছে প্রকাশ করেছিলেন যে, কিছু বিশ্বস্ত ব্যক্তি “পৃথিবীর উপরে রাজত্ব” করবে। (প্রকাশিত বাক্য ১:১; ৫:৯, ১০) এটা সুসংবাদ। মানবজাতির সবচেয়ে বড়ো চাহিদাগুলোর মধ্যে একটা হল, উত্তম সরকার। যিশুর দ্বারা শাসিত এই সরকার কী সম্পাদন করবে? যিশু বলেছিলেন: ‘তোমরা যত জন আমার পশ্চাদ্গামী হইয়াছ, পুনঃসৃষ্টিকালে, যখন মনুষ্যপুত্ত্র আপন প্রতাপের সিংহাসনে বসিবেন, তখন তোমরাও দ্বাদশ সিংহাসনে বসিবে।’ (মথি ১৯:২৮) যিশু এবং তাঁর অনুসারীদের শাসনের ফল হবে, সেই সিদ্ধ অবস্থার ‘পুনঃসৃষ্টি’ বা পুনর্নবীকরণ, যে-অবস্থা প্রথম মানব দম্পতি পাপ করার পূর্বে পৃথিবীতে উপভোগ করেছিল।

অবশিষ্ট মানবজাতির জন্য যিশু কোন আশা প্রদান করেছিলেন?

যিশু, যাঁকে স্বর্গে জীবনের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছিল, তাঁর বিপরীতে মানবজাতিকে পৃথিবীতে জীবনের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছিল। (গীতসংহিতা ১১৫:১৬) তাই, যিশু বলেছিলেন: “তোমরা অধঃস্থানের, আমি ঊর্দ্ধ্বস্থানের।” (যোহন ৮:২৩) যিশু পৃথিবীতে মানবজাতির জন্য এক চমৎকার ভবিষ্যতের বিষয়ে বলেছিলেন। একবার তিনি বলেছিলেন: “ধন্য যাহারা মৃদুশীল, কারণ তাহারা দেশের [“পৃথিবীর,” NW] অধিকারী হইবে।” (মথি ৫:৫) তিনি পরোক্ষভাবে সেই অনুপ্রাণিত গীতটি উল্লেখ করছিলেন, যেটি বলে: “মৃদুশীলেরা দেশের [“পৃথিবীর,” NW] অধিকারী হইবে, এবং শান্তির বাহুল্যে আমোদ করিবে। ধার্ম্মিকেরা দেশের [“পৃথিবীর,” NW] অধিকারী হইবে, তাহারা নিয়ত তথায় বাস করিবে।”—গীতসংহিতা ৩৭:১১, ২৯.

তাই, যে-“ক্ষুদ্র মেষপাল” স্বর্গে যায়, শুধুমাত্র তারাই অনন্তজীবন লাভ করে না। এ ছাড়া, যিশু এমন এক আশা সম্বন্ধে বলেছিলেন, যা সমগ্র জগতের লক্ষ লক্ষ মানুষের জন্য খোলা রয়েছে। তিনি বলেছিলেন: “ঈশ্বর জগৎকে এমন প্রেম করিলেন যে, আপনার একজাত পুত্ত্রকে দান করিলেন, যেন, যে কেহ তাঁহাতে বিশ্বাস করে, সে বিনষ্ট না হয়, কিন্তু অনন্ত জীবন পায়।”—যোহন ৩:১৬.

ঈশ্বর কীভাবে মানবজাতিকে দুঃখকষ্ট থেকে মুক্ত করবেন?

যিশু উৎপীড়নের দুটো উৎস থেকে মুক্তি লাভের বিষয়ে প্রকাশ করেছিলেন, যখন তিনি বলেছিলেন: “এখন এ জগতের বিচার উপস্থিত, এখন এ জগতের অধিপতি বাহিরে নিক্ষিপ্ত হইবে।” (যোহন ১২:৩১) প্রথমত, যে-ভক্তিহীন মানুষেরা দুঃখকষ্ট ঘটিয়ে থাকে, তাদের বিচার এবং ধ্বংস করা হবে। দ্বিতীয়ত, শয়তানকে বাইরে নিক্ষেপ করা হবে এবং সে আর মানবজাতিকে বিপথে পরিচালিত করবে না।

ইতিহাসজুড়ে সেইসব লোকের বিষয়ে কী বলা যায়, যারা ঈশ্বর ও খ্রিস্ট সম্বন্ধে জানার এবং তাঁদের প্রতি বিশ্বাস দেখিয়ে চলার সুযোগ না পেয়েই মারা গিয়েছে? তাঁর পাশে মৃত্যুভোগ করেছিলেন এমন একজন অপরাধীকে যিশু বলেছিলেন: “তুমি পরমদেশে আমার সঙ্গে উপস্থিত হইবে।” (লূক ২৩:৪৩) লক্ষ লক্ষ অন্যান্য লোকের সঙ্গে সেই ব্যক্তির ঈশ্বর সম্বন্ধে শেখার সুযোগ হবে, যখন যিশু তাকে এক পরমদেশ পৃথিবীতে মৃত্যু থেকে উত্থাপন করবেন। তখন তার সেই মৃদুশীল এবং ধার্মিক লোকেদের মধ্যে থাকার সুযোগ হবে, যারা পৃথিবীতে অনন্তজীবন লাভ করবে।—প্রেরিত ২৪:১৫. (w০৯ ০৮/০১)

আরও তথ্যের জন্য বাইবেল প্রকৃতপক্ষে কী শিক্ষা দেয়? বইয়ের ৩ এবং ৭ অধ্যায় দেখুন। *

[পাদটীকা]

^ যিহোবার সাক্ষিদের দ্বারা প্রকাশিত।

[২৯ পৃষ্ঠার চিত্র]

“ধার্ম্মিকেরা পৃথিবীর অধিকারী হইবে, তাহারা নিয়ত তথায় বাস করিবে।”—গীতসংহিতা ৩৭:২৯