সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

বাইবেলের দৃষ্টিভঙ্গি

বিশ্বাস

বিশ্বাস

কোনো কোনো ব্যক্তি দাবি করে যে, তারা ঈশ্বরে বিশ্বাস করে কিন্তু তাদের কাছে ‘বিশ্বাসের’ সংজ্ঞা জানতে চাওয়া হলে, তারা উত্তর দিতে গিয়ে হিমশিম খায়। তাহলে প্রশ্ন হল, বিশ্বাস কী এবং কেন তা গুরুত্বপূর্ণ?

বিশ্বাস কী?

লোকেরা যা বলে

অনেকে মনে করে, একজন ব্যক্তির বিশ্বাস থাকার অর্থ হল, উপযুক্ত প্রমাণ ছাড়াই কোনো কিছু মেনে নেওয়া। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, একজন ঈশ্বরভয়শীল ব্যক্তি এইরকম বলতে পারেন, “আমি ঈশ্বরে বিশ্বাস করি।” কিন্তু সেই ব্যক্তিকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়, “কেন আপনি তা বিশ্বাস করেন,” তা হলে তিনি হয়তো বলবেন, “আমার বাবা-মাও তা বিশ্বাস করেন” অথবা “আমাকে ছোটোবেলা থেকে এভাবেই শেখানো হয়েছে।” এই বিষয়গুলো দেখায়, কোনো কিছু বিশ্বাস করা ও কোনো কিছু মেনে নেওয়ার মধ্যে একটু হলেও পার্থক্য রয়েছে।

বাইবেল যা বলে

“বিশ্বাস প্রত্যাশিত বিষয়ের নিশ্চয়জ্ঞান, অদৃশ্য বিষয়ের প্রমাণপ্রাপ্তি।” (ইব্রীয় ১১:১) একজন ব্যক্তির প্রত্যাশাকে নিশ্চয়জ্ঞান বা নিশ্চিত করার পিছনে যুক্তিসংগত প্রমাণ থাকতে হবে। আসলে, মূল ভাষায় “নিশ্চয়জ্ঞান” অভিব্যক্তিটার জন্য যে-শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে, সেটার অর্থ কেবলমাত্র একজন ব্যক্তির অনুভূতি কিংবা তার ইচ্ছানুযায়ী চিন্তা করাকে বোঝায় না। এটা প্রকৃত প্রমাণের উপর ভিত্তি করে কোনো কিছুর প্রতি দৃঢ়প্রত্যয়কে বোঝায়।

“তাঁহার [ঈশ্বরের] অদৃশ্য গুণ, অর্থাৎ তাঁহার অনন্ত পরাক্রম ও ঈশ্বরত্ব, জগতের সৃষ্টিকাল অবধি তাঁহার বিবিধ কার্য্যে বোধগম্য হইয়া দৃষ্ট হইতেছে।”রোমীয় ১:২০.

কেন বিশ্বাস অর্জন করা গুরুত্বপূর্ণ?

বাইবেল যা বলে

“বিনা বিশ্বাসে প্রীতির পাত্র হওয়া কাহারও সাধ্য নয়; কারণ যে ব্যক্তি ঈশ্বরের নিকটে উপস্থিত হয়, তাহার ইহা বিশ্বাস করা আবশ্যক যে ঈশ্বর আছেন, এবং যাহারা তাঁহার অন্বেষণ করে, তিনি তাহাদের পুরস্কারদাতা।”—ইব্রীয় ১১:৬.

আগে যেমনটা উল্লেখ করা হয়েছে, অনেকে ঈশ্বরে বিশ্বাস করে কারণ তাদেরকে এটা শেখানো হয়েছে। তারা হয়তো বলে ‘আমার বাবা-মাও তা বিশ্বাস করেন।’ কিন্তু ঈশ্বর চান, যারা তাঁর উপাসনা করে, তারা যেন এই বিষয়ে আস্থা রাখে, ঈশ্বর রয়েছেন এবং তিনি তাদের ভালোবাসেন। তাই, বাইবেল আমাদেরকে আন্তরিকভাবে ঈশ্বরের অন্বেষণ করতে বলে, যাতে আমরা সত্যিই তাঁকে জানতে পারি।

“ঈশ্বরের নিকটবর্ত্তী হও, তাহাতে তিনিও তোমাদের নিকটবর্ত্তী হইবেন।”যাকোব ৪:৮.

কীভাবে আপনি বিশ্বাস অর্জন করতে পারেন?

বাইবেল যা বলে

বাইবেল বলে, ‘বিশ্বাস শ্রবণ হইতে হয়।’ (রোমীয় ১০:১৭) তাই, ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস গড়ে তোলার প্রথম পদক্ষেপ হল, বাইবেল প্রকৃতপক্ষে ঈশ্বর সম্বন্ধে যা শেখায়, তা ‘শোনা।’ (২ তীমথিয় ৩:১৬) বাইবেল অধ্যয়ন করার মাধ্যমে আপনি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলোর উত্তর জানতে পারবেন, যেগুলোর মধ্যে রয়েছে: ঈশ্বর কে? কীভাবে আমরা নিশ্চিত হতে পারি যে, ঈশ্বর রয়েছেন? ঈশ্বর কি সত্যিই আমার জন্য চিন্তা করেন? ভবিষ্যতের জন্য ঈশ্বরের উদ্দেশ্য কী?

চোখ মেলে তাকালেই আমরা ঈশ্বরের অস্তিত্বের পরিচয় পাই

যিহোবার সাক্ষিরা আপনার সঙ্গে বাইবেল অধ্যয়ন করতে পেরে খুশি হবে। আমাদের ওয়েবসাইট jw.org-এ এভাবে বলা আছে, “যিহোবার সাক্ষিরা লোকেদের বাইবেল সম্বন্ধে শিক্ষা দিতে ভালোবাসে, তবে আমরা কখনো কাউকে আমাদের ধর্মের একজন সদস্য হওয়ার জন্য জোরাজুরি করি না। এর পরিবর্তে, আমরা বাইবেল কী বলে, তা সম্মানপূর্বক তুলে ধরি আর এই বিষয়টা স্বীকার করি যে, প্রত্যেক ব্যক্তি কী বিশ্বাস করবেন, সেটা বেছে নেওয়ার অধিকার তার রয়েছে।”

পরিশেষে বলা যায়, বাইবেল থেকে আপনি যা পড়ছেন, সেটার সত্যতা যাচাই করার মাধ্যমে প্রাপ্ত প্রমাণের উপর ভিত্তি করে আপনার বিশ্বাস গড়ে তোলা উচিত। তা করার মাধ্যমে আপনি প্রথম শতাব্দীর বাইবেল ছাত্রদের অনুকরণ করবেন, যারা ‘সম্পূর্ণ আগ্রহপূর্ব্বক বাক্য গ্রহণ করিয়াছিল, আর এ সকল বাস্তবিকই এইরূপ কি না, তাহা জানিবার জন্য প্রতিদিন শাস্ত্র পরীক্ষা করিয়াছিল।’—প্রেরিত ১৭:১১. ▪ (g16-E No. 3)

“আর ইহাই অনন্ত জীবন যে, তাহারা তোমাকে, একমাত্র সত্যময় ঈশ্বরকে, এবং তুমি যাঁহাকে পাঠাইয়াছ, তাঁহাকে, যীশু খ্রীষ্টকে, জানিতে পায়।”যোহন ১৭:৩.