সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

ঈশ্বরের নিকটবর্তী হোন

“যাচ্ঞা কর, তোমাদিগকে দেওয়া যাইবে”

“যাচ্ঞা কর, তোমাদিগকে দেওয়া যাইবে”

“প্রভু, আমাদিগকে প্রার্থনা করিতে শিক্ষা দিউন।” (লূক ১১:১) তাঁর শিষ্যদের একজন যিশুর কাছে এই অনুরোধ করেছিলেন। এর উত্তরে, যিশু দুটো দৃষ্টান্তের বিষয়ে উল্লেখ করেছিলেন, যেগুলো আমাদেরকে শিক্ষা দেয় যে, কীভাবে প্রার্থনা করতে হবে এবং কীভাবে ঈশ্বর আমাদের প্রার্থনা শুনে থাকেন। আপনি যদি কখনো ভেবে থাকেন যে, ঈশ্বর আপনার প্রার্থনা শোনেন কি না, তাহলে আপনি যিশুর উত্তরের বিষয়ে আগ্রহী হবেন।—পড়ুন, লূক ১১:৫-১৩.

প্রথম দৃষ্টান্তটি, প্রার্থনা করেন এমন ব্যক্তির ওপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করে। (লূক ১১:৫-৮) এই গল্পে, মাঝরাতে এক ব্যক্তির ঘরে একজন অতিথি আসেন আর তাকে দেওয়ার মতো তার কাছে কোনো খাবার নেই। বাড়ির কর্তাকে শীঘ্র কিছু করতে হবে। অনেক রাত হওয়া সত্ত্বেও, তিনি কিছু খাবার চাওয়ার জন্য এক বন্ধুর বাড়িতে যান। প্রথমে, সেই বন্ধু উঠতে চান না কারণ তার সঙ্গে তার পরিবার ঘুমাচ্ছিল। কিন্তু দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ বাড়ির কর্তা, নির্লজ্জভাবে তার বন্ধুকে সেই পর্যন্ত ক্রমাগত অনুরোধ করে চলেন, যতক্ষণ না তিনি ওঠে তাকে কিছু খাবার-দাবার দেন। *

দৃষ্টান্তটি প্রার্থনা সম্বন্ধে আমাদেরকে কী শিক্ষা দেয়? যিশু আমাদেরকে বলছেন যে, আমাদের অবিরতভাবে যাচ্ঞা করতে, অন্বেষণ করতে ও আঘাত করতে হবে। (লূক ১১:৯, ১০) কেন? যিশু কি এটা ইঙ্গিত দিচ্ছেন যে, ঈশ্বর আমাদের প্রার্থনা শুনতে ইচ্ছুক নন? না। যিশুর মূল বিষয়টা হল, একজন ইতস্তত বন্ধুর বিপরীতে, ঈশ্বর সেই ব্যক্তিদের উপযুক্ত অনুরোধ রাখতে ইচ্ছুক, যারা বিশ্বাস নিয়ে তাঁর কাছে প্রার্থনা করে। অবিরত অনুরোধ করার দ্বারা আমরা এই ধরনের বিশ্বাস দেখিয়ে থাকি। বার বার চাওয়ার দ্বারা আমরা দেখাই যে, আমাদের সত্যিই সেই বিষয়গুলোর প্রয়োজন, যেগুলোর জন্য আমরা প্রার্থনা করছি আর আমরা সত্যিই বিশ্বাস করি যে, ঈশ্বর তা দিতে পারেন—যদি সেটা তাঁর ইচ্ছা অনুসারে হয়।—মার্ক ১১:২৪; ১ যোহন ৫:১৪.

দ্বিতীয় দৃষ্টান্তটি, “প্রার্থনা-শ্রবণকারী” যিহোবার প্রতি মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করে। (গীতসংহিতা ৬৫:২) যিশু জিজ্ঞেস করেন: “তোমাদের মধ্যে এমন পিতা কে, যাহার পুত্ত্র রুটী চাহিলে তাহাকে পাথর দিবে। কিম্বা মাছ চাহিলে মাছের পরিবর্ত্তে সাপ দিবে? কিম্বা ডিম চাহিলে তাহাকে বৃশ্চিক দিবে?” উত্তরটা খুবই স্পষ্ট—কোনো যত্নশীল বাবা-ই তার সন্তানকে এই ধরনের ক্ষতিকর জিনিস দেবেন না। এরপর যিশু দৃষ্টান্তের অর্থ ব্যাখ্যা করেন: অসিদ্ধ মানব পিতারা যদি তাদের সন্তানদেরকে ‘উত্তম উত্তম দ্রব্য দান করেন,’ তাহলে “ইহা কত অধিক নিশ্চয় যে, স্বর্গস্থ পিতা, . . . পবিত্র আত্মা দান করিবেন,” যা তাঁর কাছে চায় তাঁর এমন পার্থিব সন্তানদের জন্য সবচেয়ে উত্তম দান! *লূক ১১:১১-১৩; মথি ৭:১১.

ঈশ্বর সেই ব্যক্তিদের উপযুক্ত অনুরোধ রাখতে ইচ্ছুক, যারা বিশ্বাস নিয়ে তাঁর কাছে প্রার্থনা করে

এই দৃষ্টান্তটি, “প্রার্থনা-শ্রবণকারী” যিহোবা সম্বন্ধে আমাদের কী শিক্ষা দেয়? যিহোবা, যিনি তাঁর সন্তানদের প্রয়োজনগুলোর যত্ন নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী, তাঁকে একজন যত্নশীল পিতা হিসেবে দেখার জন্য যিশু আমাদেরকে আমন্ত্রণ জানান। তাই, যিহোবার উপাসকরা তাদের হৃদয়ের অনুরোধ নিয়ে স্বচ্ছন্দে তাঁর কাছে আসতে পারে। আর তিনি তাদের সর্বোত্তমটাই চান, এটা জেনে তারা সহজেই তাদের অনুরোধের উত্তরকে মেনে নেয়, এমনকী যদি উত্তরটা তাদের আশানুযায়ী না-ও হয়। * ▪ (w১৩-E ০৪/০১)

প্রস্তাবিত বাইবেল পাঠ

লূক ৭-২১

^ যিশুর দৃষ্টান্ত বাস্তব জীবনের বিভিন্ন রীতিনীতি ও অভ্যাসকে তুলে ধরে। যিহুদিরা আতিথেয়তা দেখানোকে এক পবিত্র কর্তব্য হিসেবে দেখতো। একটা পরিবার দিনের জন্য যথেষ্ট খাবার রান্না করে রাখত, তাই তা শেষ হয়ে গেলে খাবার চাওয়াটা সাধারণ বিষয় ছিল। এ ছাড়া গরিব পরিবার হলে, পরিবারের সবাই একটা রুমেই মেঝেতে শুতো।

^ প্রায়ই যিশু এই যুক্তি “ইহা কত অধিক নিশ্চয় যে” ব্যবহার করতেন অর্থাৎ ছোটো শিক্ষাকে অধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের প্রতি প্রয়োগ করতেন। একজন পণ্ডিত ব্যক্তি ব্যাখ্যা করেন: “যুক্তি অনুযায়ী, ‘ক যদি সত্যি হয়, তাহলে এটা কত অধিক নিশ্চয় যে, খ-ও সত্যি হবে।’”

^ কীভাবে প্রার্থনা করতে হবে এবং কীভাবে ঈশ্বর আমাদের প্রার্থনা শুনে থাকেন, সেই সম্বন্ধে আরও জানার জন্য যিহোবার সাক্ষিদের দ্বারা প্রকাশিত বাইবেল প্রকৃতপক্ষে কী শিক্ষা দেয়? বইয়ের ১৭ অধ্যায় দেখুন।